তথ্য ও প্রযুক্তির মশাল জ্বলে উঠুক হাতে হাতে

জেনে নিন ধুমপান ত্যাগ করার অসাধারণ কৌশল


ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ধূমপানের কুফল হিসেবে ফুসফুসের ক্যান্সার হয়, হার্টের রক্তনালি সরু হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা পায়, যৌন ক্ষমতা  কমে যায় প্রভৃতি নানা ক্ষতিকর দিক রয়েছে এই ধূমপানের। তাই অনেকেই ধূমপান নামক এই ঘাতককে চিরতরে নির্বাসনে দিতে চান কিন্তু নানা কারণে ধূমপান আর ছাড়া হয় না। আর এসব কিছু বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞগণ ধূমপানের কবল থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য ১৩টি উপায় বলে দিয়েছেন। এসব পদ্ধতি অনুসরণ করলে অবশ্যই ধূমপান ছাড়া সম্ভব। জেনে নিন এই ১৩টি উপায় কি কি -



১. প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন কেন আপনি  ধূমপান ত্যাগ করবেন বা ঠিক কি কারনে ধুমপান ছাড়া আপনার জন্য জরুরি ? অর্থাৎ এর ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে ভাবুন । যেমন ক্যান্সার ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে, ধুমপান করলে মুখে গন্ধ হয় ইত্যাদি ।

২. একা একা ধূমপান না ছেড়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্য (যদি ধূমপায়ী থাকেন), বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীদের উৎসাহিত করে একসঙ্গে সবাই একটি নির্ধারিত দিনে  ধূমপান ছাড়ার ঘোষণা দিন।

৩. কোন ধরনের থেরাপি বা বিকল্প মেডিকেশন ছাড়া কখনোই ধূমপান ছাড়া ঠিক নয়। কারণ সিগারেটের নিকোটিনের উপর ব্রেইন অনেক ক্ষেত্রে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তাই ধুমপান ছেড়ে দিলেই নানা উপসর্গ শুরু হয়। এজন্য চিকিৎসকের পরামর্শে সিগারেটের বিকল্প থেরাপির কথা চিন্তা করুন ।

৪. নিকোটিনের বিকল্প হিসেবে গাম, লজেন্স ইত্যাদি ব্যবহার করুন ৷ যখন ধুমপানের ইচ্ছা জাগবে তখন মুখে চুইংগাম নিন এবং চিবাতে বা চুশতে থাকুন ৷

৫. নিকোটিনের বিকল্প ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। এজন্য ভ্যারেনিক্লিন সেবন করতে পারেন তবে সেটা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে ৷
৬. মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। এজন্য পরিবারের অন্য সদস্য, বন্ধু বান্ধব বা কলিগদের সাথে সময় কাটান ৷ প্রয়োজনে হালকা ম্যাসাজ নিন।

৭. ধুমপান করার ইচ্ছা জাগলে মনোযোগ অন্যদিকে নিতে ঘরের কাজ অথবা অন্য যে কোন কাজ করার চেষ্টা করুন। তাহলে কিছু সময়ের জন্য ধুমপানের কথা ভুলে যাবেন ৷

৮. ধূমপান ত্যাগের জন্য বার বার চেষ্টা করুন। একবার ছেড়ে দিলে দ্বিতীয় বার আর ধূমপান শুরু করবেন না।

৯. অ্যালকোহল পরিহার করুন। কারন এটি লিভার ও কিডনির মারাত্নক ক্ষতিসাধন করে ৷

১০.নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এতে করে ব্রেইন নতুন করে প্রচুর রক্ত ও অক্সিজেন পাবে ৷ ফলে শারীরবৃত্তিয় কাজ ভালো হবে ৷ মনে আনন্দ আসবে ৷

১১. নিয়মিত প্রচুর পরিমাণ সবুজ শাক-সবজি ও মৌসুমী রঙিন ফলমূল খান। এতে করে শরীরের বিপাক ভালো হবে ৷ ফলে স্ট্রেজ কমবে ৷

১২. ধূমপান বন্ধ করে যে আর্থিক সাশ্রয় হবে তার একটা অংশ জনকল্যাণ অথবা হালকা বিনোদনের জন ব্যয় করুন। দেখবেন মনে শান্তি পাবেন ৷

১৩. ধূমপান ছাড়ুন বন্ধু-বান্ধব বা  প্রেমিক-প্রেমিকাকে খুশি করার জন্য নয়, বরং আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্যই এটা করেছেন। মানসিক ভাবে এমন জোড়ালো অবস্থান নিন। দেখবেন ধুমপান করার ইচ্ছা মনের মধ্যে আর আসবেই না ৷

সর্বপরি আপনি যদি আত্মহননের পথে চলতে চান তাহলে ধূমপান করুন। আর যদি  সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচতে চান তাহলে ধূমপান অবশ্যই ছেড়ে দিন ৷ এতে পরিবেশ ও মন দুটোই ভালো থাকবে ৷