তথ্য ও প্রযুক্তির মশাল জ্বলে উঠুক হাতে হাতে

রসুনের ১০টি উপকারিতা





রান্নাঘর থেকে রসুন ইতোমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে ওষুধের দোকানে। এর কারণ হল, রসুনের রয়েছে অসাধারণ কিছু ঔষধিগুণ ।রসুন,পেঁয়াজ এবং অন্যান্য ঝাঁঝালো সবজি অনেক ক্ষেত্রেই বেশ উপকারী। ক্যান্সার গবেষকদের মতে রসুন ও পেঁয়াজ নিয়মিত খেলে পুরুষরা প্রষ্টেট ক্যান্সারহাত থেকে রেহাই পেতে পারে। চীন দেশের গবেষকরা এ ব্যাপারে আরো উচ্চকিত। তারা বলেন, যারা প্রত্যহ ১০ গ্রামের অধিক পরিমাণে রসুন, পেঁয়াজ বা অন্যান্য ঝাঁঝালো স্বাদের সবজি খেয়ে আসছেন, তাদের প্রষ্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি যারা প্রত্যহ ২ গ্রামের কম খাচ্ছেন তাদের অর্ধেক (৫০%)। ১০ গ্রাম পুর্ণ করতে ৩ কোয়া রসুন বা ১ চা-চামচ পেঁয়াজের কুচিখেতে হবে। এটি খুবই সহজ। কাচা রসূন খাওয়া সবচেয়ে উপকারী ।রান্না করা রসুন বা পেঁয়াজ খেলে তা কম উপকারী হবে-এরুপ কোনো তথ্য আমাদের হাতে এখন পর্যন্ত আসেনি।
রসুন শুধুমাত্র রান্নার কাজে লাগে এমনটি নয়। পেঁয়াজ গোত্রের এই খাদ্যটি ‘দুর্গন্ধযুক্ত গোলাপ’ নামে পরিচিত। বিভিন্ন রোগ দূরে রাখাসহ আরো বহু উপকারিতা লুকিয়ে রয়েছে রসুনে। এখানে জেনে নিন এমনই ১০টি দারুণ গুণের কথা

১)হৃদযন্ত্র ও লিভারের উপকার : প্রতিদিন রসুনের একটি বা দুটি করে কোয়া খেলে তা স্বাস্থ্যকর হার্ট ও লিভার দেয়। এতে অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানও রয়েছে। এটি বিপাক ক্রিয়া সুষম করে।

২)কফ ও কাশি : যেকোনো বয়সে সর্দি-কাশির জন্য উপকারী রসুন। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস কফ এবং সাধারণ সর্দির জন্য বিশেষ উপকারী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে সাম্প্রতিক গবেষণায়। প্রাকৃতিক কফ সিরাপ বানিয়ে নিন এভাবে- এক কাপ পানিতে এক কোয়া রসুন সেঁচে দিন এবং তা মিনিট পাঁচেক গরম করুন। এই পানিকে কিছুটা মিষ্টি করতে এক চামচ মধু দিয়ে নিন একং খেয়ে ফেলুন। এ ছাড়া তিন কোয়া রসুন কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। সর্দি-কাশি চলে যাবে।

৩)খেলোয়াড়ের পা : ছত্রাক একদম পছন্দ করে না রসুন। তাই খেলোয়াড়দের পায়ে যেমন ছত্রাক হয়, তেমনি আমাদের পায়েও ছত্রাক হয়। দুই বা তিন কোয়া রসুন নিয়ে পারিতে দিয়ে গরম করুন। তারপর একটি ফুটবাথে ওই পানি নিয়ে তাতে দুই পা ভিজিয়ে রাখুন। এভাবে কয়েক দিন ধরে আধা ঘণ্টা করে ভিজিয়ে রাখলে ধীরে ধীরে উন্নতি হবে।

৪)কেটে গেলে জ্বালা-পোড়া কমাতে : রসুনে প্রদাহজনিত যন্ত্রণা কমানোর উপাদান রয়েছে। তাই কোথাও পুড়ে কালশিটে পড়লে বা কেটে গেলে যন্ত্রণা শুরু হলে সেখানে রসুনের কোয়া কেটে দিন। দেখবেন যন্ত্রণা বেশ কমে এসেছে।

৫)চুলকানি উপশমে : ত্বকের যে সব স্থানে চুলকানি হয়েছে সেখানে রসুনের কোয়া কেটে দিন। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান চুলকানি দূর করে দেবে।

৬)মশা দূরে রাখতে : আপনার ত্বকে যদি একটু রসুন ঘষে দেন, তবে আপনাকে নয় পাশের জনকে মশা কামড়াবে। এর গন্ধ মশার জন্য একটু বেশি তীব্র যা সে সহ্য করতে পারে না। এভাবে মশা যেখানে রয়েছে সেখানে রসুন কেটে রেখে দিতে পারেন।

৭)প্রাকৃতিক কীট-পতঙ্গ দমন : বাড়িতে বা আশপাশের বাজে কীট-পতঙ্গ দূর করতে বাড়িতেই ওষুধ বানাতে পারেন। যেকোনো দোকান থেকে তরল সাবান কিনুন। একটি গামলায় পানি গরম দিয়ে তাতে দুই মুঠো রসুন ছেড়ে দিন। বেশ কিছুক্ষণ গরম করে স্প্রে-বোতলে করে রসুনমিশ্রিত পানি নিয়ে তাতে এক টেবিল চামচ লিকুইড সাবান দিন। এবার স্প্রে করুন।

৮)জীবাণুমুক্তকরণ : একটি স্প্রে বোতল সাদা ভিনেগার দিয়ে পূরণ করুন। এতে তিন-চারটি রসুনের কোয়া কেটে দিন। কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে তা কাজের যেকোনো টেবিল বা আববাবের উপরিতলে স্প্রে করুন এবং মুছে ফেলুন। জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে।

৯)ফাটা কাঁচ জোড়া লাগাতে : কাঁচ বা চুলের সামান্য ফেটে যাওয়া অংশ ঠিক করতে আঠার কাজ করে রসুন। একটি রসুন থেঁতলে নিয়ে এর ঘন রস ফাটা অংশে দিলে তা আটকে গেছে বলেই মনে হবে। চুলে দিলে ফাটা উপরিভাগ দেখবেন মসৃণ হয়ে গেছে।

১০)ডি-আইসার : শীতের দেশে গাড়িতে রসুনের লবণ বেশ কাজের ডি-আইসার হিসেবে কাজ করে। তা ছাড়া রাস্তায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বরফ জমতে বাধা দেয় রসুনের লবণ।