আমাদের প্রত্যেকের কোনো না কোনো সময় চোখের পাতা নাচে বা লাফায় ৷ কিন্তু কেন চোখের পাতা লাফাচ্ছে, সেই কারণটা একবারও ভাবেন না। প্রধাণত পেশীর সংকোচনের ফলেই চোখের পাতা লাফায়। ডাক্তারি ভাষায় এই রোগটির নাম Myokymia। দিনে দু-একবার হলে সেটি স্বাভাবিক বলে ধরা হয়। কিন্তু সেটা যদি মাত্রারিক্ত হয় ও বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।
কেন চোখের পাতা লাফায় বা নাচে ?
প্রত্যেকের চোখে কিছু বিশেষ পেশি থাকে ৷ এসবের মধ্যে দুটি পেশির ওপর চোখের পাতা বন্ধ হওয়া বা খুলে যাওয়া নির্ভর করে। এই পেশি দুটির একটি থাকে চোখের ওপরের পাতায়, অন্যটি নীচে। চোখের পাতা বন্ধ বা খোলার ব্যাপারে নির্দেশ আসে মগজ থেকে। ঐ নির্দেশ বৈদ্যুতিক চার্জের আকারে স্নায়ু মারফত চোখের পাতায় পৌছে। সাময়িক কোনও কারনে যদি চোখের পাতায় থাকা বিশেষ ঐ পেশি দুটোকে বৈদ্যুতিক চার্জ পৌছে দিতে না পারে, তবে চোখের পাতা নাচতে থাকে। আবার স্নায়ু থেকে পেশিতে বৈদ্যুতিক চার্জ পৌছানোর সঙ্গে সঙ্গে চোখের কাঁপুনি বন্ধ হয়ে যায়।
চোখের পাতা কাঁপা বা লাফানোর পিছনে ৭টি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ রয়েছে। নিচে তা উল্লেখ করা হল-
১। মানসিক চাপ: কোনও কঠিন মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে গেল শরীর বিভিন্ন উপায়ে তার প্রতিক্রিয়া দেখায়। চোখের পাতা লাফানো মানসিক চাপের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে।
২। ক্লান্তি: পরিমিত ঘুমের অভাব বা অন্য কোনও কারণে ক্লান্তি থেকেও চোখের পাতা লাফানো শুরু হতে পারে। এর জন্য দরকার ঘুম। তাহলেই ঠিক সেরে যাবে।
৩। দৃষ্টি সমস্যা: দৃষ্টিগত কোনও সমস্যা থাকলে চোখের উপর চাপ পড়ে। অনেকক্ষণ ধরে টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল ফোনের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের দৃষ্টিতে প্রভাব ফেলতে পারে। এই সব সমস্যা থেকে চোখের পাতা লাফানো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
৪। ক্যাফিন এবং এ্যালকোহল: অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, ক্যাফিন এবং এ্যালকোহল অতিরিক্ত সেবনে চোখের পাতা লাফাতে পারে। তাই এই সব বর্জন করাই শ্রেয়।
৫। চোখের শুষ্কতা: কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা, অতিরিক্ত এ্যালকোহলের প্রভাব, চোখে কন্ট্যাক্ট ল্যান্স ঠিক মতো না বসানো কিংবা বয়স জনিত কারণে চোখের মধ্যেকার নার্ভ দুর্বল হয়ে পড়ে। চোখের শুষ্কতার কারণে চোখের পাতা লাফায় বলে চক্ষু চিকিৎসকরা মনে করেন।
৬। পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা: পুষ্টির ভারসাম্যহীনতাকেও চোখের পাতা লাফানোর একটি কারণ হিসেবে দেখানো হয়। বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব জনিত কারণে এমনটি হতে পারে।
৭। এলার্জি: যাঁদের চোখে এলার্জি আছে, তাঁরা অনবরত চোখ চুলকান। ফলে চোখের জলের সঙ্গে হিস্টামিনও নির্গত হয়। এর কারণে চোখ কাঁপে বলে অনেকেই মনে করেন ৷