তথ্য ও প্রযুক্তির মশাল জ্বলে উঠুক হাতে হাতে

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর কারন, লক্ষণ ও প্রতিকার





অ্যালার্জিক রাইনাইটিস সাধারনত ঠান্ডা জনিত উপসর্গ হাঁচি , চুলকানি, এবং বন্ধ কিংবা প্রবাহ প্রবন নাক এর কারনে হয়ে থাকে। এই উপসর্গ গুলো সাধারনত শুরু হয় অ্যালার্জেন প্রকাশিত হবার পর পরই। কিছু মানুষের অ্যালার্জিক রাইনাইটিস কয়েক মাসের জন্য হয় আবার কিছু মানুষ সারা বছরই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এ আক্রান্ত থাকে।

রোগের লক্ষনঃ
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এ আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষের কিছু হালকা উপসর্গ বা লক্ষণ থাকে যা খুব সহজেই চিকিৎসা করে ভাল করা যায়।
এলার্জিক রাইনাইটিস রোগটি হলো এলার্জিজনিত নাকের প্রদাহ। এর অন্যতম প্রধান লক্ষন হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারো কারো চোখ দিয়ে পানি পড়া এবং চোখ লাল হয়ে যায়।


আপনার কখন ডাক্তার দেখাতে হবে?
আপনার ডাক্তার দেখানো উচিৎ যখন অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর উপসর্গ আপনার ঘুমের সমস্যা করে থাকে, স্কুল অথবা কাজের মাঝে দৈনন্দিন জীবন যাপন কে ব্যাহত করে। আপনার ডাক্তার সাধারনত আপনার উপসর্গ এবং আপনার অসুবিধার সঠিক বর্ণনা থেকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগ নির্নয় করতে পারবে । যদি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর উপযুক্ত কারন খুজে না পাওয়া যায় তখন আপনাকে অ্যালার্জিক টেষ্ট দেওয়া হতে পারে।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ
রক্ত পরীক্ষাঃ রক্ত পরীক্ষা করে বিশেষত ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কিনা তা দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় ৷

সিরাম আইজিইয়ের মাত্রাঃ
সাধারণত এলার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে আইজিইয়ের মাত্রা বেশি থাকে।

স্কিন প্রিকটেস্টঃ
এই পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন এলারজেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে তা ধরা পড়ে।
এছাড়াও রয়েছে সাইনাসের এক্স-রে।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর কারন কি?
অভিযোজন প্রক্রিয়ায় যদি কোন অ্যালার্জেন যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর তা যদি নাকের ভেতরের আবরণকে আক্রান্ত করে, তখন আমাদের শরীর প্রতিক্রিয়া দেখায়। এর ফলে দেহের আক্রান্ত কোষ ও প্রতিরক্ষা কোষ অনেক রাসায়নিক পদার্থ মুক্ত করে দেয়, যার ফলে মিউকাস মেমব্রেন(নাকের ভেতরের আবরণ) ফুলে যায় এবং অতিরিক্ত মিউকাস (তরল রস) উৎপন্ন হয়। প্রচলিত অ্যালার্জেন যা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর কারন পরাগরেণু, গুড়া মাটি, ধুলোবালি, ত্বকএর স্তর, প্রস্রাবের ফোঁটা, অথবা কিছু নির্দিষ্ট প্রাণীর লালা হতে পারে।

চিকিৎসা এবং প্রতিকারঃ
যদিও সম্পূর্নভাবে গুপ্ত অ্যালার্জেন প্রতিকার করা কঠিন, অ্যালার্জেন কমানোর কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, যা আপনি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর আক্রমন হিসেবে জানেন তা আপনার উপসর্গের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। যদি আপনার অবস্থা মধ্যম হয় তবে আপনি নিজেই কিছু ঔষধ খেয়ে এই উপসর্গ কমাতে নিজেকে সাহায্য করতে পারেন, যেমন- নন-সিডাটিং অ্যান্টিহিস্টামিন অথবা ডিকঞ্জেস্ট্যান্টস, এবং লবন-পানির দ্রবন দিয়ে নাক পরিস্কার করে নিতে পারেন।

অ্যালার্জি ভ্যাকসিনঃ অ্যালার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বিশেষত উন্নত দেশগুলোতে ও পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অবিহিত করেন। এটাই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি।