বিদ্যুৎ প্রবাহ রয়েছে এমন কোনো খোলা তারের সংস্পর্শে এলে যে কোন ব্যক্তির দেহে বিদুৎতায়ন হয়ে অনেক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। একেই বলে বৈদ্যুতিক শক খাওয়া। অনেক সময় বৈদ্যুতিক শক খেলে মৃত্যুও হতে পারে। এরকম ঘটনা আমরা প্রায়ই দেখি। এ ঘটনাগুলো সংঘটিত হওয়ার প্রধান কারণ অবহেলা অথবা অসাবধানতা। যাই হোক এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমাদের যা করতে হবে -
* বৈদ্যুতিক শকের ঘটনা যদি হঠাৎ ঘটে যায় তাহলে ঘাবড়ে না গিয়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। এ সময় উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে সেই দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পারি ৷
* বিদ্যুতায়িত ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য প্রথমেই মেইন সুইচটি অফ করতে হবে।
* মেইন সুইচ পাওয়া না গেলে শুকনো লাঠি বা বাঁশ জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে ধাক্কা দিয়ে তরিতাহত ব্যক্তিকে তার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে ৷
* আশেপাশে কোনা রাবারের গ্লোভস বা জুতা থাকলে তা পরে ধাক্কা দিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তিকে তার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
* শুকনো কাঠ/বাঁশ দিয়ে বিচ্ছিন্ন করা না গেলে শক্ত দড়ি দিয়ে ফাঁস তৈরী করে ঐ ব্যক্তিকে টেনে সরাতে হবে।
* কোনো অবস্থাতেই কখনও খালি হাতে বিদুৎতায়িত ব্যক্তিকে স্পর্শ করা যাবে না।
বিদ্যুতায়িত ব্যক্তিকে তার থেকে মুক্ত করার পর নিম্নোক্ত প্রাথমিক চিকিৎসাগুলো দিতে হবে ৷
১) আক্রান্ত ব্যক্তিকে সরিয়ে আনার পর একটি স্থানে একপাশে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে এবং হাতের উপর মাথা রাখতে হবে ৷ হাঁটুগুলো মুড়ে দিতে হবে এবং চিবুক উঁচু করে শ্বাস পরীক্ষা করতে হবে ।
২) আহত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে সিপিআর দিতে হবে।
৩) বিদ্যুতায়িত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস প্রত্রিয়া চালু রাখতে হবে ৷
৪) গলা, বুক এবং কোমরের কাপড় আলগা বা ঢিলা করে দিতে হবে ৷
৫) আহত ব্যক্তির শরীর ভাল করে ম্যাসেজ করতে হবে যাতে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে ৷
৬) আহত ব্যক্তি সুস্থ থাকলেও বিছানায় শুইয়ে বিশ্রাম নিতে হবে ৷
৭) যেখানে পুড়ে গেছে, তাতে জরুরি চিকিৎসা দিতে হবে। এক্ষেত্রে সাধারণ আঘাত বা কাটার চিকিৎসা দিতে হবে ৷
৮) রক্তপাত হলে রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে এবং স্বাভাবিক আঘাতের চিকিৎসা চালাতে হবে।
৯) ছোটখাট পোড়া হলে টেপের পানির নীচে ধুয়ে নিতে হবে ৷
১০) যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে অথবা হাসপাতালে নিতে হবে।
১১) হাসপাতালে পৌঁছানো পর্যন্ত তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
রোগীর বিদ্যুতায়িত হওয়ার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিতে হবে।