পথে ঘাটে অনেক সময় যে কাউকে কামড়াতে পারে কুকুর। এই কুকুরের কামড় খুব যন্ত্রণাদায়ক এবং মারাত্নক। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। রেবিস নামক ভাইরাস থেকে এই জলাতঙ্ক রোগ হয়ে থাকে। এই রেবিস ভাইরাস কুকুরের মুখের লালা থেকে ক্ষতস্থানে লেগে যায় এবং সেখান থেকে রক্তে মিশে স্নায়ুতে পৌঁছে জলাতঙ্ক রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
রোগের লক্ষণ :
জলাতঙ্ক রোগ হলে স্নায়ুতে সমস্যা হয়ে থাকে। যার কারণে মস্তিষ্কে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কে প্রদাহের সাথে খাদ্যনালীতে তীব্র সংকোচন হতে পারে। এছাড়া রোগী কোন আলো বা শব্দ সহ্য করতে পারে না।
এছাড়া পেটে ব্যাথা, স্নান করতে অনীহা ভাব, জ্বর, শরীরের পেশী টান, মুখ থেকে অতিরিক্ত থুতু বের হওয়া এবং এর প্রধান লক্ষণ হল জল বা কোন তরল দেখে আতঙ্কিত হওয়া।
এই রোগের রোগীরা জল দেখে বা জলের কথা মনে পড়লে প্রচণ্ড আতঙ্কিত হয় বলে এই রোগের নাম জলাতঙ্ক বা Hydrophobia
এই সকল লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তবে কুকুর কামড়ালে প্রাথমিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়। এই কাজগুলো করলে রোগের তীব্রতা কিছুটা কমানো সম্ভব।
ক্ষত পরিষ্কার করুন: প্রথমে একটি পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে ক্ষতের স্থানটি চেপে ধরুন। তারপর কুকুরের কামড় দেওয়া স্থানে বেশি করে সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করা ভাল। এটি ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণু দূর করে থাকে। তবে ক্ষতপরিষ্কার করার সময় খুব বেশি ঘষাঘষি করবেন না।
রক্ত বন্ধ করুন: ক্ষত স্থানে চাপ দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। এতে রক্ত পরা বন্ধ হয়ে যাবে।
ব্যান্ডেজ: ক্ষতস্থানটিতে অ্যান্টিবায়েটিক ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে নিন। তারপর একটি গজ কাপড় দিয়ে ভাল করে ব্যান্ডেজ করে ফেলুন। ক্ষত স্থান খোলা থাকলে এতে বিভিন্ন রোগ জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।
ডাক্তারের কাছে যাওয়া: প্রাথমিক চিকিৎসার পর ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং তার পরামর্শে টিটেনাস ইনজেকশন দিতে হবে। কুকুর কামড়ানোর পর অব্যশই টিটেনাস ইনজেকশন দিতে হবে। কুকুর কামড়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই ইনজেকশন দেওয়া উচিত।
সতর্কতা:কুকুরের কামড়ে অনেক সময় রোগী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। তাকে আস্থা প্রদান করতে হবে যে, সে আবার সুস্থ হয়ে যাবে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অব্যশই রোগীকে ডাক্তার কাছে নিয়ে যেতে হবে।